Emdadul Mia

ধর্ম ব্যবসায়ীদের আর সুযোগ না দেওয়ার আহব্বান দুই উপদেষ্টার

বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর জুলুম-নিপীড়ন হয়েছে। সম্পদ লুট হয়েছে। সবকিছু হয়েছে রাজনৈতিক ইন্ধনে। নতুন বাংলাদেশে সবাই মিলে এসব অপসংস্কৃতি রুখে দেয়া হবে। এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও ড. আসিফ নজরুল।

সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর পলাশীতে শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে একথা বলেন তারা।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি এবং তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, নতুন সরকারের লক্ষ্য, সকল প্রকার জুলুম-নিপীড়ন উৎখাত করা। আমরা এক পরিবার। এই পরিবারে একটি গোষ্ঠী যদি আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তবে পুরো বাংলাদেশই অনিরাপদ হয়ে ওঠে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক ভোটকব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের পাশে কেউ দাঁড়ায় না। কিন্তু নতুন বাংলাদেশে এসব চক্রান্ত হতে দেয়া হবে না। সবাই এক হয়ে না এগুলে নতুন দিনের স্বপ্ন ব্যর্থ হবে। সব ধর্মের মানুষ মিলে আমাদের যে সম্প্রীতির ইতিহাস, তা ধরে রাখতে হবে। এখানে কোনো বৈষম্য হতে দেব না।

উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, প্রতিবছর এ আয়োজন অনেক ঘটা করে হয়। এবার বন্যার জন্য সে আয়োজন সীমিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমেই সর্বজনীন কথাটি প্রতিফলিত হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, কোনো ধর্মই বলে না অসৎ কাজ করো, গুম করো, বিচার বহির্ভূত হত্যা করো, ভোটাধিকার লুট করো। সব ধর্মের মূল বক্তব্য একই। এখানেই সবচেয়ে বড় ঐক্যের উপাদান। মুক্তিযুদ্ধ শুধু হিন্দু করেনি মুসলিম করেনি। সবাই করেছে। বন্যায় যখন ভুগছে, তখন সবাই ভুগছে। দুর্যোগে একসাথে কাঁদছি, আনন্দে একসাথে হাসছি।

এরমাঝেও বিভেদ তৈরি করছে ধর্ম ব্যবসায়ীরা উল্লেখ করে ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রত্যেক সরকারের আমলে হিন্দুদের ওপর হামলা হয়েছে। পরে তারাই আবার ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করেছে। গেল ১৫ বছরে কোনো মন্দিরে হামলার বিচার হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি। বলেন, কারও রাজনৈতিক খুঁটি হিসেবে ব্যবহার হবেন না। বরং, রাজনীতিবিদদেরই খুঁটি হিসেব ব্যবহার করবেন। সে যে দলই ক্ষমতাই আসুক।

আইন উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন সময়ে হামলা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কেন হামলা হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। কেউ যদি রাজনীতি করতে গিয়ে কারও ওপর জুলুম করে, পরে তারাই যদি কোনো কারণে প্রতিহিংসার শিকার হয়, তাহলে যেন তা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখা হয়, সে আহ্বানও জানান তিনি।

তিনি অনুরোধ করেন, ‘সংখ্যালঘু’ শব্দটি ব্যবহার করবেন না। এই দেশে কেউ সংখ্যাগুরু না, কেউ সংখ্যালঘু না। এই দেশ সবার। সবারই এই দেশে সমান অধিকার।