Emdadul Mia

ধর্মীয় উগ্রতা ও ধর্মীয় অজ্ঞতা সবসময়ে বিপদজনক!

আমরা জানি ভারত ধর্ম নিরপক্ষ রাষ্ট্র।ধর্ম নিরপক্ষ রাষ্ট্রের মানে হিন্দুত্ববাদ রাষ্ট্র নয় সেটাও আমরা জানি। প্রত্যেক ধর্মীয় গোষ্টি তাদের স্বীয় ধর্ম পালন করবে স্বাধীন এবং সুন্দর ভাবে।রাষ্ট্র কারো উপর কিছু চাপাবে না।রাষ্ট্রের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় তাদের ধর্মীয় রীতি সংখ্যালগুদের উপর কোনো কিছু চাপাবে না।এমনটাই তো হওয়া কথা!
.
সম্প্রতি,ভারতে ২৪ বছর বয়সী তাবরেজ আনসারি বিষয়ে আসুন,তার নাম জানার পর মুসলিম হওয়ার কারনে টানা ১৮ ঘণ্টা পেটানো হয়েছে তাকে।জয় শ্রীরাম,জয় হনুমান বলতে বাধ্য করা হয়েছে।১৮ ঘণ্টা পেটানোর পর অজ্ঞান হয়ে গেলে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে।মারাত্নকভাবে আহত হওয়ার পরেও তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি।অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করে চারদিন পর তার মৃত্যু হয়।বিজেপি,পুলিশ রাষ্ট্র মিলে তাকে হত্যা করেছে

আমরা সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারি,বিজেপি শাসিত ঝাড়খন্ডে যেখানে গত চার বছরে প্রায় ১২ জন মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।আহতদের কথা বাদ ই দিলাম!একেমন উগ্রতা?এ কেমন হিংস্রতা?

আমরা অতিতেও দেখেছি, ৮ বছর বয়সী আসিফা’র সেই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা!আসিফাকে অপহরন করে একটা মন্দিরে রেখে টানা আট দিন ধরে ধর্ষণ করে বিজেপি’র কর্মীরা।নির্যাতনে মারা যাবার পর আসিফার লাশ ফেলে রেখে যায় নরপশুরা।বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে,নির্যাতনে আসিফার নখগুলি কালচে বর্ণ হয়ে গিয়েছিল।তার শরীরে ও আঙ্গুলে অসংখ্য নীল ও লাল দাগ ছিল।এই শিশুটির সারা শরীরেই ছিল হিংস্র কামড়ের দাগ। মানুষ নামের পশুগুলি তার সারা শরীর পাথর দিয়ে থেথলে দেয়।তার গলার হাড়,পাঁজরের হাড়সহ সারা শরীরের হাড় ও অস্থিমজ্জা ছিল ভাঙ্গা।

আসিফাকে হত্যার আগেও এক পুলিশ অফিসার সবাইকে রিকুয়েস্ট করেছিল,তাকে শেষবারের মত ধর্ষণের সুযোগ দিতে!অথচ, এরকম একটি হিংস্র -ঘৃন্য অপরাধের পরও আসিফা কি কি ন্যায় বিচার পেয়েছিলো?ভারত সব শুনার পরও আসিফা’ হত্যায় ন্যায় বিচার দিতে পারেনি!কারন,একচোখা আদালত,সংখ্যাগুরুদের ধর্মীয় মোড়কে চলে যত কানুন!!

একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্রে সকল ধর্মের, গোত্রের মানুষের স্বাধীন ও সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার থাকবে এটায় তো স্বাভাবিক।অথচ ভারতে ধর্মীয় উগ্রতা এমন পর্যায়ে পৌছেছে সেখানে সংখ্যাগুরুরা ধর্মীয় ভাবাবেগে অন্য ধর্মলম্বীদের উপর তাদের ধর্ম চাপিয়ে দিতে চাই।শুধু তাই নয় তারা কিন্তু হিংস্রতায় নেমে নিরপরাদ মানুষ হত্যায় নামে।

আমরা জানি,ধর্ম হচ্ছে বিশ্বাসের বিষয়।ধর্ম সবসময়ে শান্তির আলো ছড়ায়। ধর্ম মানুষকে আলোর পথ দেখায়। অথচ, ভারতে এই উগ্রবাদীরা বরাবরই অন্ধকারেই রয়ে গেলো!!

আমরা এটাও জানি, উগ্রতা যখন ধর্মীয় ভাবাবেগ বা ধর্মীয় উন্মাদনার রূপ ধরে আসে, তখন তা সর্বাপেক্ষা বিপজ্জনক।শুধু বিপজ্জনকই নয় খুবই বিপজ্জনক।