একজন শিক্ষার্থী ১৩ ঘণ্টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্ত রয়েছেন। তাঁকে সে মাধ্যমে প্রভাবিত করা সহজ। নিউইয়র্কে হামলাকারী বাংলাদেশি তরুণ আকায়েদ উল্লাহর উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, এই তরুণ সামাজিক মাধ্যমে উগ্রবাদে যুক্ত হয়েছেন বলে বলা হচ্ছে।
একজন জঙ্গিবাদী ঘটনার পর রাজনৈতিক দলগুলো একে অন্যকে দায়ী করে। এ প্রবণতা উগ্রবাদবিরোধী কর্মকাণ্ডে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তখন রাজনৈতিক সংঘাত আর উগ্রবাদী তৎপরতার মধ্যে তফাত করা কঠিন হয়ে পড়ে। যদিও বাস্তবে দুটি আলাদা বিষয়।
প্রবন্ধে পাঁচটি সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে কোনোভাবেই উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক রং দেওয়া যাবে না। উগ্রবাদবিরোধী মতবাদকে শক্তিশালী করতে হবে। দেখা যায়, ফেসবুকে বাঁশের কেল্লার মতো গ্রুপগুলো উগ্রবাদ ছড়াচ্ছে। এদের পাল্টা মতবাদ তৈরি করতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে উগ্রবাদবিরোধী উপাদান যুক্ত করা যেতে পারে, যাতে শিক্ষার্থীরা বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করতে পারেন। আরবি ধর্মীয় বইগুলোর প্রচুর বাংলা অনুবাদ করতে হবে, যাতে মানুষ ধর্মের বিষয়গুলো নিজে নিজেই নিজের ভাষায় জানতে, বুঝতে পারে। সর্বোপরি জঙ্গিবাদ দমনের মতো বিষয়গুলোতে মানবাধিকারের বিষয়টিকে মাথায় রাখতে হবে।
, অন্যান্য ধর্মীয় উগ্রবাদের বিষয়ও এই আলোচনায় যুক্ত করা হলে আরও ভালো হতো। তিনি বলেন, উগ্রবাদীরা যে মতাদর্শ প্রচার করছে, তার বিপরীত মতাদর্শ (কাউন্টার ন্যারেটিভ) তৈরি করা দরকার। এটা অনেক চ্যালেঞ্জের বিষয়। সরকার অনেক টাকা খরচ করে এটা করতে পারে। তবে তা কতটা কার্যকর হবে, তার নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।
একই অধিবেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আরেক শিক্ষক নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস ‘কমিউনিটি এনগেজমেন্ট অ্যান্ড প্রিভেন্টিং ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম: দ্য কেস অব বাংলাদেশ’ নামের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেখানে তিনি বলেন, উগ্রবাদ দমনের জন্য সমাজের বিভিন্ন ধাপকে কার্যকরভাবে যুক্ত করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কমিউনিটি পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা উগ্রবাদ দমনে তাঁদের দায়িত্ব সম্পর্কে পর্যাপ্ত সচেতন নন।
প্রবন্ধ উপস্থাপন শেষে আলোচনায় অংশ নিয়ে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো দোষ নেই। যাঁরা এর ব্যবহারকারী, তাঁরা এটাকে কীভাবে ব্যবহার করছেন, সেটা হচ্ছে বিষয়।
পরে উন্মুক্ত আলোচনায় তরুণ শ্রোতারা ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সরকারের সমঝোতা হয়েছে উল্লেখ করে এর সমালোচনা করেন।